আবু সাঈদ খান বলেন, ভূমি দখলের মতো ভয়ংকর থাবা কোনোভাবেই থামছে না। এই দখলবাজদের মধ্যে ভূমিখেকো আছে, স্বার্থান্বেষী মহল আছে। এমনকি এই দলে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও নাম লিখিয়েছে। এর উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে তেলেগু সুইপার কলোনির কথা। সেখানকার মানুষগুলোকে তাদের জায়গা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে এর কোনো প্রতিকার হয়নি।

তিনি বলেন, আমার মনে হয়, তেলেগু সম্প্রদায় এবং সমতল ও পাহাড়ের আদিবাসীদের সম্পত্তি দখল করাটা খুব সহজ। আরেকটা সহজ কাজ হলো, সরকারি সম্পত্তি দখল করা। কোনো বাঙালি মুসলমানের সম্পত্তি দখল হলে, তখন মুসলিম সম্প্রদায় থেকে প্রতিবাদ হয়। যখন হিন্দুর সম্পত্তি দখল হয়, তখন বাঙালিদের মধ্য থেকে একটা প্রতিবাদ ওঠে। তবে যখন তেলেগু, মণ্ডা, সাঁওতাল কিংবা পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী এবং সরকারি সম্পত্তি দখল হয়, তখন প্রতিবাদ করার কেউ থাকে না। এর জন্য শক্ত আইন দরকার। তবে সেই আইনটা তড়িঘড়ি করে এমনভাবে করা ঠিক হবে না, যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে দখলবাজরা পার পেয়ে যায় কিংবা সাজাটা মওকুফ হয়।

২১ জুন, ২০২৩ তারিখ বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সমকাল সভাকক্ষে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২১’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান এ কথা বলেন।

বৈঠকে আইন বিশেষজ্ঞরা জানান, তারা মনে করেন আমলাতন্ত্রকে শক্তিশালী করতেই ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের অনেক ধারা ও শাস্তি দেশের প্রচলিত আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ আইনের মাধ্যমে ভূমিদস্যুদের শাস্তি কমিয়ে তাদের আরও দখলে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

সমকাল, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে এবং পরিচালনায় বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী।

সমকালে প্রকাশিত সংবাদ থেকে নেওয়া।