ধর্মান্ধদের চোখে সংখ্যালঘুরা যেন বাংলা প্রবাদের সেই \’নন্দঘোষ\’। নিজেদের স্বার্থে ঘা লাগলেই তারা সংখ্যালঘুদের দায়ী করে, টার্গেট করে চড়াও হয়। এবারও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জামায়াত ও তাদের সহযোগীরা ১৪ জেলার নানা স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করে, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়, মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর করে। কোনো কোনো স্থানে হামলা করার আগে তারা বলেছে যে, হিন্দুদের জন্যই নাকি সাঈদীর মতো \’নির্দোষ\’ মানুষের ফাঁসির রায় হয়েছে। এটি যে ডাহা মিথ্যা ও ন্যক্কারজনক অপপ্রচার, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
যারা এসব কথা ছড়িয়ে সাধারণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করেছে, হিন্দুদের ওপর হামলা করেছে_ তাদের না বোঝার কথা নয় যে, সাঈদীর ফাঁসির জন্য কোনো সম্প্রদায়কে দায়ী করা যায় না। বরং সাঈদী তার কৃত অপরাধের জন্যই আদালতের রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার স্বপ্ন বুকে নিয়ে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান নির্বিশেষ বাংলার আপামর জনসাধারণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। যারা এ সংগ্রামের বিরুদ্ধে থেকে যুদ্ধাপরাধ করেছে, ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে, আজ তাদেরই বিচার হচ্ছে। এর সঙ্গে কোনো ধর্মের যোগসূত্র নেই। মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য দিয়ে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের মহিমান্বিত (!) করার চেষ্টা হয়েছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ রাজনীতি। হীন রাজনৈতিক স্বার্থে হিন্দুদের টার্গেট করা হয়েছে। পাকিস্তান আমলে এ ভ্রান্ত রাজনীতির কারণে বারবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়েছে। ২৫ মার্চে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রথম টার্গেট ছিল হিন্দু জনগোষ্ঠীই। এর আগে \’৬৪ সালে হিন্দুদের ওপর হামলা হয়েছে। \’৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের জন্য হিন্দুদের বিভিন্নভাবে নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানে সংখ্যালঘুরা তো বটেই, এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি মুসলমানরাও নানাভাবে নিগৃহীত হয়েছে। কিন্তু এখন মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা কেন হামলার শিকার হবে_ সেটিই বড় প্রশ্ন।
এবার হঠাৎ করে নয়, পরিকল্পিতভাবে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়েছে। পূর্বাহ্নে অবহিত হওয়ার পরও তা মোকাবেলায় পুলিশ প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ায়নি। সামাজিক প্রতিরোধের চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু পরিকল্পিত ও সশস্ত্র হামলা তারা রুখে দাঁড়াতে পারেনি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যেসব সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা গিয়েছিলেন, তাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে_ যখন হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে, তখন মুসলিম প্রতিবেশী নারী-পুরুষ বাধা দিয়েছেন, হিন্দুদের আশ্রয় দিয়েছেন। এ জন্য তারা লাঞ্ছিত হয়েছেন, তাদের ওপরও হামলা হয়েছে। ঝুঁকির মুখেও হিন্দু নারীর শিশুকে প্রতিবেশী মুসলিম নারী বুকে আগলে রেখেছেন। এটি আমাদের সমাজের মানবিকবোধ ও হিন্দু-মুসলমানের সম্প্রীতি বা হার্দিক বন্ধনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এমন অসংখ্য নজির একাত্তরেও দেখা গেছে। একাত্তরে যে এক কোটি শরণার্থী ভারতে গিয়েছিলেন, যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই হিন্দু, সেখানে গিয়ে হিন্দু নরনারীরা হানাদার ও রাজাকারদের অত্যাচারের পাশাপাশি মুসলিম প্রতিবেশীদের সহৃদয়তার দৃষ্টান্তও তুলে ধরেছেন। তাই স্বাধীনতা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফিরে এসেছে সব পরিবার। সঙ্গতভাবেই তারা প্রত্যাশা করেছিল, স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আর আক্রান্ত হবে না। কিন্তু হিন্দু-মুসলমানের এই সংহতির বাতাবরণের প্রধান শত্রু যে সাম্প্রদায়িক-ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি, তা নির্মূল ছাড়া এই সাম্প্রদায়িক হামলা রোধ করা কি সম্ভব?
পাকিস্তানে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির পরিণাম কী ভয়াবহ হতে পারে তা \’দ্বিজাতিতত্ত্বের\’ জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই বুঝতে পেরেছিলেন। \’৪৭ সালের আগে জিন্নাহ বলতেন, মুসলমানরা আলাদা জাতি, তাদের জীবন-ইতিহাস-ঐতিহ্য সবকিছুই হিন্দুদের থেকে পৃথক। \’৪৬ সালের দাঙ্গা, উদ্বাস্তু সমস্যা তাকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছিল। তাই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর দ্বিজাতিতত্ত্বের পুরনো ব্যাখ্যা চেপে রেখে বলেন, \’মুসলমানরা মসজিদে যেতে পারে, হিন্দুরা মন্দিরে যেতে পারে, প্রত্যেকে তার নিজ নিজ উপাসনালয়ে যেতে পারে, তবে আমরা মুসলিম নই, হিন্দু নই_ আমরা পাকিস্তানি।\’ কিন্তু তত দিনে নেতৃত্ব ধর্মান্ধগোষ্ঠীর কাছে চলে গেছে। জিন্নাহর মৃত্যুর পর রাজনীতিতে ধর্মান্ধতা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। যে মাওলানা আবুল আলা মওদুদী পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বিরোধী অবস্থানে ছিলেন, সেই জামায়াতের প্রধান ইসলামী শাসন কায়েমের তত্ত্ব হাজির করলেন।
আমরা পাকিস্তানিদের পরাজিত করেছি, কিন্তু পাকিস্তানের ভাবাদর্শকে পরাজিত করতে পারিনি। ধর্মনিরপেক্ষতা বাহাত্তরের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হলেও রাজনীতিতে তার চর্চা হয় না, ক্ষেত্রবিশেষ পাকিস্তানি ভাবধারা জিইয়ে রাখা হয়েছে। আর \’৭৫-এর পর বাংলাদেশ রাষ্ট্রে পাকিস্তান ভাবাদর্শ দ্রুত সংক্রমিত হয়। খন্দকার মোশতাক আহমেদ তখন ধর্মনিরপেক্ষতার স্থলে নতুন তত্ত্ব দেন_ ধর্মকর্ম গণতন্ত্র। এ ধ্বনির ছদ্মাবরণে উচ্চকিত হয় আবারও সেই \’দ্বিজাতিতত্ত্ব\’। তখন ন্যাপের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ সুর মিলিয়ে বলেন, ধর্মকর্ম সমাজতন্ত্র। এভাবে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি চর্চার দ্বার উন্মোচিত হয়। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে পঞ্চম সংশোধনীর মধ্য দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা নির্বাসন করে \’সংবিধানে ধর্মীয় ছাপ\’ এঁটে দেওয়া হয়। আর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে সংবিধানে সনি্নবেশিত হয় রাষ্ট্রধর্ম। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি থেকে দূরে থাকেনি। বক্তৃতা-বিবৃতি-স্লোগানে তা ধারণ করেছে, নির্বাচনের ময়দানে জামায়াতের মতোই বিএনপি, আওয়ামী লীগ কে কত সাচ্চা মুসলমান, তা প্রমাণের প্রতিযোগিতা করেছে। তখন ধর্মনিরপেক্ষতা কেবল বাম দলগুলোর \’তত্ত্বকথা\’ হিসেবেই রয়ে গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় এবং পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানে ফিরে এসেছে; তবে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম বিধান পাশাপাশি ঠাঁই পেয়েছে, যা পরস্পরবিরোধী। সংবিধানের ১২তম অনুচ্ছেদে প্রতিস্থাপিত হয়েছে যে, \’রাষ্ট্র কর্তৃক কোনো ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান\’ করা যাবে না, অথচ রাষ্ট্রধর্ম বিধান বহাল রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ প্রগতিশীলদের কাছে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র আর ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতিকদের কাছে \’ধর্মরাষ্ট্র\’। সংবিধানের এই গোঁজামিল কি রাষ্ট্র পরিচালনায় কোনো প্রভাব ফেলছে না?
আমার মনে হয়েছে, বিএনপি যখন ক্ষমতাসীন হয়, তখন দেশে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আড়ালে \’বাংলাদেশি মুসলমানদের\’ শাসন কায়েম হয় আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের আড়ালে \’বাঙালি মুসলমানদের\’ শাসন শুরু হয়। আসলে \’বাংলাদেশি মুসলমান\’ আর \’বাঙালি মুসলমান\’ একই জনগোষ্ঠীর দুই নাম, আদতে কোনো পার্থক্য নেই।
পাকিস্তান আমলে \’মুসলমানের রাষ্ট্র\’ গড়া যেমন ভুল ছিল, আজ \’বাংলাদেশি মুসলমান\’ বা \’বাঙালি মুসলমানের\’ রাষ্ট্র গড়া একই ভুলের পুনরাবৃত্তি মাত্র। তবে এই ভুলের সমাধান কি \’বাঙালির রাষ্ট্র\’? না, সেটিও যৌক্তিক নয়। স্বাধীনতা-উত্তর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা খণ্ডিতভাবে দেখার কারণে রাষ্ট্রিকভাবে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে ধারণ করা হয়। এ ভুলের পরিণতিতে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধে। বিদ্রোহ দেখা দেয় পার্বত্য চট্টগ্রামে। তা জবরদস্তিমূলকভাবে দমন করার ভ্রান্ত নীতির কারণে সেখানে রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি চলেছে দীর্ঘ সময়। পার্বত্য শান্তিচুক্তির মধ্য দিয়ে তা অবসান হলেও সংখ্যালঘু জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি মেলেনি এখনও।
পঞ্চম সংশোধনীর রায়ের আলোকে নাগরিক পরিচয় \’বাংলাদেশি\’ গৃহীত হলেও জাতি হিসেবে \’বাঙালি\’ বলে সংখ্যালঘু জাতিসত্তার সমমর্যাদার নীতি অগ্রাহ্য করা হয়েছে। কোনো ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম করায় অন্যান্য ধর্মের মানুষের অধিকার যেভাবে ক্ষুণ্ন হয়, ঠিক তেমনি কোনো জাতিসত্তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হলে অন্য জাতিসত্তার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়।
ধর্মরাষ্ট্র, জাতিরাষ্ট্র কোনো সমাধান নয়_ সমাধান হচ্ছে সেক্যুলার বা ইহজাগতিক রাষ্ট্র; যা হবে ধর্মনিরপেক্ষ, জাতিনিরপেক্ষ, লিঙ্গনিরপেক্ষ_ মানবিকতাই হবে সে রাষ্ট্রের মর্মবাণী। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এমন মানবিক রাষ্ট্রের কথাই বলে।
কেউ কেউ বলবেন, বাংলাভাষা, বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনার উন্মেষের মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিসংগ্রাম সূচনা হয়েছিল এবং সেই চেতনা মুক্তিযুদ্ধে জাগরূক ছিল_ তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। কিন্তু এটিও সত্য যে, একাত্তরের সংগ্রামের মোহনায় বাঙালি ছাড়াও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী মিলিত হয়েছিল। বাঙালি, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল, গারো, মণিপুরি, খাসিয়াসহ সব জাতির মানুষ একত্রিত হয়ে \’মহাজাতিক ঐক্য\’ গড়ে তুলেছিল। মুক্তিযুদ্ধে সব মানুষের রক্ত এমনই এক ধারায় প্রবাহিত হয়েছে যে, মহাজাতিক বন্ধনকে তা আরও অটুট করেছে। সেই সত্যের আলোকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও রাজনীতি পরিচালনা করতে হবে। তাই কোনো ধর্ম বা জাতির প্রতি বিরূপ আচরণ করা কেবল অগণতান্ত্রিক ও অমানবিকই নয়, আমাদের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য প্রতিবন্ধকও।
এ প্রসঙ্গে বলা আবশ্যক, নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের যে জাগরণ এসেছে, তার মধ্যে এ উপলব্ধির পরিচয় পাই। শাহবাগের মঞ্চ থেকে \’জয় বাংলা\’, \’তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা\’সহ যখন মুক্তিযুদ্ধের সময়কার স্লোগানগুলোর সঙ্গে তারা \’তুমি কে আমি কে_ বাঙালি বাঙালি\’ স্লোগান দিচ্ছিল; যখন আদিবাসী জনগোষ্ঠী এসে শাহবাগের জাগরণে সংহতি প্রকাশ করতে হাজির হলো, তখন ধ্বনিত হলো, \’তুমি কে আমি কে_ চাকমা মারমা বাঙালি\’, \’সাঁওতাল গারো বাঙালি, আদিবাসী বাঙালি।\’ তারপর থেকে ওই মঞ্চে সব জাতির পরিচয়ের স্লোগানই প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। অগ্রসর চিন্তার তরুণদের এই উপলব্ধি অভিনন্দনযোগ্য। ৪২ বছর রাজনীতিকরা যে সংখ্যালঘু জাতিসত্তার প্রতি সম্মান জানাতে পারেনি, তরুণ প্রজন্ম সে সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে উদার, সংহতির বাতাবরণ রচনায় তারা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন।
প্রসঙ্গক্রমে বলা প্রয়োজন, কোনো কোনো ব্যক্তি শাহবাগের আন্দোলনকে উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করছেন, এটি তাদের তথ্যগত ঘাটতি, নয়তো বিভ্রান্ত করার অপকৌশল। কেউ বলছেন, একদিকে উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, অন্যদিকে উগ্র ধর্মীয় আন্দোলন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছে। এটি সত্য নয়। আসলে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক-ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছে নতুন প্রজন্ম।
ধর্ম ও রাজনীতিকে একরেখায় মেলানোর ভ্রান্ত নীতিতে অনেক রক্ত ঝরেছে, মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে, এখনও ঘটছে, এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সব ধর্মের, সব জাতির এক মানবিক রাষ্ট্র অর্থাৎ সেক্যুলার বাংলাদেশই একমাত্র সমাধান।
এ দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তা তদন্ত এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া জরুরি। তবে সংখ্যালঘুদের অধিকার ও মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হলে রাষ্ট্র, রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনকে অসাম্প্রদায়িক-ধর্মনিরপেক্ষ হতে হবে। সাম্প্রদায়িক বা ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি রেখে, রাষ্ট্র ও প্রশাসনে এ উপাদানগুলো জিইয়ে রেখে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা সম্ভব নয়।